তাঁর সাহিত্য প্রতিভা বাংলা সাহিত্য জগৎকে খুলে দিয়েছিল এক নতুন দিগন্ত। ডাঃ সুকুমার সেন তাঁর বাঙ্গালা সাহিত্যের ইতিহাসে বলেছেন, ‘শুধু বাঙ্গালা সাহিত্যে নয়, আমার জ্ঞানে বিশ্বসাহিত্যের ইতিহাসে ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়ের মতো অদ্ভূত ব্যক্তিত্ব ও আরও অদ্ভূত-জীবন লেখকের আবির্ভাব ঘটে নাই।’
বাপ মাকে খুব ছেলেবেলায় হারিয়েছিলেন এবং জ্ঞাতিতুতো পিতামহের তত্ত্বাবধানে মানুষ। তাই বিদ্যালয়ে পড়াশোনা বেশিদূর এগোতে পারেনি। তাই তাঁর শিক্ষা বেশিটাই আপনাআপনিই হয়েছিল। ‘ডমরুচরিতে’র রচয়িতা হিসেবে তাঁর নাম বাংলা সাহিত্যে অমর হয়ে থাকবে। তিনি নিশ্চিত ছিলেন উদ্যোগী, স্বাধীনচেতা পুরুষ এবং নিজের অতিসাধারণ অবস্থা থেকে নিজের এবং দেশের উন্নতির জন্য আপ্রাণ কাজ করে গেছেন । সাহিত্য রচনায় তাঁর ভাষা স্বচ্ছন্দ, প্রাঞ্জল ও তীক্ষ্ন – অত্যন্ত সুখপাঠ্য। লেখায় কোথাও নেই জড়তা, আছে হাস্যরস, যা ব্যঙ্গাত্বক হলেও তাতে কোনো স্থল নেই। যেমন তিনি ছিলেন বাংলা ছাড়াও বিবিধ ভাষা যেমন উড়িয়া, হিন্দি, পারসি, উর্দ্ধু, সংস্কৃতে পন্ডিত, তেমনি তাঁর কৌতূহল ও জ্ঞান ছিল বিবিধ বিষয়েও , যেমনঃ রসায়ন, ভূতত্ত্ব, জীবতত্ত্ব, নরতত্ত্ব, উদ্ভিদতত্ত্ব, সংগীত, জ্যোতিষ ইত্যাদি।
তাঁর রচনারীতি, বাচনভঙ্গি ও ভাবনা একান্তই নিজস্ব। লেখ্যভাষা ও কথ্যভাষার এক অসাধারণ যুগলবন্দি।